ঢাকা   শুক্রবার , ১৪ মার্চ ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৩ রমজান ১৪৪৬

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ০৯ মার্চ ২০২৫

অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোজা রাখার বিধান

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত : ২২:৩৭, ০৯ মার্চ ২০২৫

অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোজা রাখার বিধান

রমজানে রোজা রাখা প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ। ছবি: সংগৃহীত

রমজানে রোজা রাখা প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা পরহেজগারি অর্জন করতে পারো (সূরা বাকারা: ১৮৩)।

অপর আয়াতে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘রমজান মাস- যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে লোকেদের পথ প্রদর্শক এবং হেদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনারূপে এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা রাখে আর যে পীড়িত কিংবা সফরে আছে, সে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, রমজান মাসে সফর বা অসুস্থতার ক্ষেত্রে রোজা রাখায় শিথিলতা রয়েছে। এরমধ্যে নারীর ঋতুস্রাবের সময় ও প্রসব পরবর্তী স্রাবের সময়কালও অন্তর্ভুক্ত। তবে রোজা রাখার ফলে অন্তঃসত্ত্বা নারী যদি স্বাস্থ্যহীনতা বা গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা করেন, সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞ ধার্মিক ডাক্তারের পরামর্শে রোজা ভাঙতে পারবেন।

আরও পড়ুন: রোজা রেখে সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে?

যদিও সুস্থ হয়ে সেই রোজাগুলো কাজা করতে হবে। একইভাবে যেসব নারী সন্তানকে দুধপান করান, তারা যদি রোজা রেখে এমনটি করতে গিয়ে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন, তবে সে ক্ষেত্রেও রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে। এই ক্ষেত্রেও সুস্থ হওয়ার পর রোজা কাজা করতে হবে। তবে কাফফারা আদায় করা জরুরি নয়।

এ ক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি যে, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের রোজা রাখার কারণে গর্ভে থাকা নবজাতকের দৈর্ঘ্য বা ওজনে কোনো পরিবর্তন আসে না। তবে এটি ঠিক যে, কখনো কখনো রোজা রাখা অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা নারীরা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত কারণে দুর্বল হয়ে পড়েন। কাজেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা আবশ্যক। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক যদি নিষেধ করেন, তবেই রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে।

আরও পড়ুন: রোজা রেখেও হতভাগা যে ২ শ্রেণির মানুষ

তবে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও দুগ্ধপান করানো নারীদের ক্ষেত্রে রোজা রাখায় শিথিলতার বিষয়টি হাদিস দ্বারাও প্রমাণিত। আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে- একবার আমাদের ওপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অশ্বারোহী বাহিনী হঠাৎ আক্রমণ করল। আমি রাসুল (সা.) এর নিকট এলাম। আমি তাকে সকালের খাবার খাওয়ারত অবস্থায় পেলাম। তিনি (নবীজি) বললেন- কাছে আসো এবং খাও। জবাবে আমি বললাম, আমি রোজা আছি।

Advertisement

পরে নবীজি বললেন, সামনে আসো, আমি তোমাকে রোজা সম্পর্কে বলবো। আল্লাহ্ তা’আলা মুসাফির লোকের রোজা ও অর্ধেক নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন। আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাদের রোজা মাফ করে দিয়েছেন। আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ রাসুল (সা.) দুজনের কিংবা একজনের কথা বলেছেন। আমার আফসোস এই যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আমি খাবার খাইনি। (তিরমিজি, হাদিস: ৭১৫; আবূ দাউদ, হাদিস: ২৪০৮)

আরও পড়ুন: রমজান মাসে ফজিলতপূর্ণ যে ৩ আমল করবেন

তবে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও দুগ্ধপান করানো নারীরা রোজা রেখে ক্ষুধাজনিত কারণে সৃষ্ট সমস্যা থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন। সেগুলো হলো- ক্লান্তি কমাতে বিশ্রামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া, যতদূর সম্ভব দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা, অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা, ভারি কিছু বহন না করা, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা, বিশেষত ভাজাপোড়া সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে চিনিজাতীয় খাবার ও মিষ্টি এড়িয়ে চলা, সেহরিতে ফাইবার জাতীয় কিছু খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা এবং ইফতারের পর প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া।

সারাদিনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন চ্যানেল 24 অ্যাপ-

 

Detail page R1/ ‍adblv&adfinix passbakc

আরো পড়ুন  

×

Nagad sticky AD