
পর্যটনখ্যাত সান্তোরিনি দ্বীপ।
পর্যটনখ্যাত সান্তোরিনি দ্বীপে একের পর এক ভূমিকম্প আঘাত হানার ফলে হাজারো মানুষ দ্বীপটি ছেড়ে পালিয়েছে। গ্রিক সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ইআরটি জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি বাসিন্দা দ্বীপটি ছেড়ে গেছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে শত শত মানুষ তাদের মালপত্র হাতে দ্বীপের একটি বন্দরে জড়ো হন। সেখানে তারা এথেন্সগামী ফেরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
মঙ্গলবার ভোরবেলায় ফের ৪.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত সপ্তাহান্তে হওয়া ৪.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের কাছাকাছি। সেটি ছিল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন। গত তিন দিনে এজিয়ান সাগরে সান্তোরিনি ও কাছের আমোরগোস ও ইওস দ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকায় সাড়ে পাঁচ'শরও বেশি ভূমিকম্প হয়েছে, যেগুলোর মাত্রা ছিল ৩ মাত্রার বেশি। খবর সিএনএনের।
আরও পড়ুন: রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার তারিখ নিয়ে যা জানা গেল
গ্রিসের ভূমিকম্প পরিকল্পনা ও সুরক্ষা সংস্থা (ওএএসপি) ধারণা করছে, এই তীব্র ভূমিকম্প প্রবণতা আরও অনেক দিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহও স্থায়ী হতে পারে।
‘ইনস্টাগ্রামের দ্বীপ’ নামে পরিচিত সান্তোরিনি প্রতি বছর ৩৪ লাখ পর্যটক আকর্ষণ করে। তবে সেখানে স্থানীয় বাসিন্দার সংখ্যা মাত্র ২০ হাজার। এদের মধ্যে অনেকেই এখন মূল দ্বীপটির নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে তা ছেড়ে যাচ্ছেন।
৩৫ বছর বয়সী বাসিন্দা জুলিয়ান সিনানাজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'আমি দ্বীপে কাজ করি, আমি এখানে বহু বছর ধরে বাস করছি। কিন্তু আজ কেউ ভাবতেও পারেনি এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। এখন দ্বীপে যা ঘটছে তা অবিশ্বাস্য।'
সোমবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস বাসিন্দাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেন, 'আমরা একটি অত্যন্ত তীব্র ভূ-গাঠনিক ঘটনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তবে কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে।
নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার জন্য অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সান্তোরিনি থেকে এথেন্সগামী ১৫টি ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে। দ্বীপের সব স্কুল শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং বাসিন্দাদের বড় ধরনের ঘরোয়া সমাবেশ এড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ১৮ বছর বয়সী ডোরি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর কেউ কাজ করছে না। পুরো দ্বীপ ফাঁকা হয়ে গেছে।
আফ্রিকান ও ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত সান্তোরিনির বাসিন্দারা ভূমিকম্পের সঙ্গে পরিচিত, তবে এমন ঘন ঘন ভূমিকম্প দ্বীপটিতে বিরল।
এই দ্বীপটি তার কালডেরার জন্য বিখ্যাত, যা একটি ভয়াবহ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট বাটির মতো গহ্বর। প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে প্রলয়ংকরী অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে এটি তৈরি হয়েছিল।
সান্তোরিনিতে সর্বশেষ বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ১৯৫৬ সালে, যার মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। সেই ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হন।
সারাদিনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন চ্যানেল 24 অ্যাপ-
এম