
মুজিবের ছবির পরিবর্তে টাকায় থাকছে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি
আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসছে নতুন ডিজাইনের টাকা। নতুন নোটে থাকবে না শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। এর পরিবর্তে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্যসহ জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অনুমোদনের কথা জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করছে সরকার। আপাতত এই চার ধরনের নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সব টাকার নোট থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেয়া হবে।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমেছে ভারতীয় রুপির দাম
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন টাকা ছাপার বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করি আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন টাকা।
যেভাবে ছাপা হয় নতুন নোট
বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুন মাসে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এই প্রেসে নোট ছাপানো শুরু হয়। ওই বছরের নভেম্বর মাসে ১০ টাকার নোটও ছাপানো হয় সেখানে। প্রতিটি নোট ছাপানোর আগে তার নকশা অনুমোদন করে সরকার। সেজন্য দরপত্র ডেকে চিত্র শিল্পীদের দিয়ে নোটের নকশা করানো হয়।
নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাঁকশাল।
বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় টাকা ছাপায় না। সাধারণত একটি নোট ৪ থেকে ৫ বছর চলে। এরপর তা পুনর্মুদ্রণ করা হয়। ছোট মানের নোট বেশি হাতবদল হওয়ায় তা দ্রুত নষ্ট বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়।
বছরের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা মুদ্রণ বা উৎপাদন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রেখে দেওয়া হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বাজারে ছাড়া হয়, তখনই তা মুদ্রা বা টাকায় পরিণত হয়। তার আগে সেটা টাকা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি সার্কুলেশন প্রতিবেদনে যোগ করা হয় না।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশের ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ১০টি কাগুজে নোট প্রচলন আছে। এর মধ্যে ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আছে। কোনো কোনো নোটের দুপাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এ ছাড়া ধাতব মুদ্রাগুলোতেও তার ছবি আছে।
সারাদিনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন চ্যানেল 24 অ্যাপ-
এএইচ