রোগের জন্য দায়ী জিন নির্মূলের প্রযুক্তি আসছে বাংলাদেশে
জীবের সবচেয়ে ক্ষুদ্র অংশ জীনকে সম্পাদনা করার, সবচেয়ে সহজ ও স্বল্প ব্যয়ের প্রযুক্তি আসছে, বাংলাদেশে। ক্রিসপারকাস নামের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফসল, মানুষ এবং প্রাণীর রোগের জন্য দায়ি ত্রুটিপূর্ণ জিন ফেলে দিয়ে, নির্মূল করা হবে সংশ্লিষ্ট রোগ। এছাড়া ফসল এবং গবাদী পশুর উৎপাদন বাড়াতেও ব্যবহার করা হবে এই কৌশল। তবে এতো আশার মাঝে আছে অন্ধকারও। কোন কারনে এই প্রযুক্তির অপব্যবহার নামিয়ে আনতে পারে ভয়াবহ পরিণতি। তাই বাংলাদেশে ব্যবহারে নীতিমালা চান বিজ্ঞানীরা।
জীবের শরীরের সবচেয়ে ক্ষুদ্র এই অংশকেই বলে জিন। এতোদিন এর রহস্য গোপন থাকলেও, আধুনিক বিজ্ঞানের বদন্যতায় বংশগতির ধারক-বাহক এসব জিন রহস্য আর অজানা নয়। এর কোনটি রোগের কারণ, কোনটি উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর বংশ বিস্তারে বেশি ভূমিকা রাখে সবই এখন বিজ্ঞানীদের নখদর্পনে।
ভবিষ্যতের খাদ্য সংকট মোকাবেলায় এখন চলছে, এ আবিষ্কারকে কাজে লাগানোর জোর প্রচেষ্টা। তাই ফসল কিংবা প্রাণীর রোগ প্রতিরোধে বিজ্ঞানীদের গবেষণার চোখ এখন জিন সম্পাদনায়। এর মাধ্যমে নিম্নমানের জিন সরিয়ে, ভালো জিন প্রতিস্থাপন করা হয়। ১৯৮৭ সালে প্রথম এ নিয়ে গবেষণা শুরু হলেও, প্রযুক্তির জটিলতা আর অতিরিক্ত খরচে কারণে খুব একটা এগোয়নি তা। তবে ২০১৩ সালে আশার আলো দেখায়, বিজ্ঞানীদের নতুন এক আবিষ্কার। ক্রিসপারকাস নামের এ প্রযুক্তি আবিষ্কারে জিন সম্পাদনা যেমন সহজ হয়, তেমনি কমে আসে খরচও।
এরই মধ্যে ক্রিসপারকাস ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ধানের ব্লাস্ট, টমেটোর পাউডারি মিলডিউ প্রতিরোধী জাত আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চেষ্ট চলছে বাংলাদেশেও এ প্রযুক্তি কাজে লাগানোর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফসল, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগী কিংবা মাছের রোগ বালাই দমন বা উৎপাদন বাড়ানো ছাড়াও মানুষের চিকিৎসায় এ প্রযুক্তি আনবে আমুল পরিবর্তন। ফলে পাল্টে যাবে ওষুধ ব্যবহারের ধরনও।
তবে এ প্রযুক্তির অপব্যবহারের শঙ্কাও কম নয়। মানব ভ্রুণে এর ব্যবহারে পাওয়া সম্ভব বাবা-মার ইচ্ছেমতো শিশু। তাই এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে ঢোকার আগেই নীতিমালা চান বিজ্ঞানীরা।